,

মাগুরায় এই প্রথম আঁটিহীন কুলের চাষ

মাগুরা প্রতিনিধি: এই প্রথম মাগুরায় আঁটিহীন কুলের চাষ। বিচিহীন এই কুল যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। দেখতে দেশিয় কুলের মতো হলেও খেতে সুস্বাদু এবং তার ভিন্নতা ভিতরে বিচি নেই। তাই দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও বিভাগীয় পর্যায় থেকে নাসির এগ্রোফার্ম এন্ড নার্সারীতে লোকজন আসে এই কুল নিতে বা দেখতে বলে জানান নার্সারীর মালিক নাসির আহম্মেদ।

মাগুরা সদর উপজেলার রাউতড়া গ্রামে বানিজ্যিকভাবে চাষ হয়েছে বিচিহীন এই কুল। বানিজ্যিকভাবে চাষ করে দেশে সাড়া ফেলেছে বিচিহীন (সিডলেস) এ কুল। তাই বর্তমানে এ কুল বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও এলাকার প্রায় ১২/১৪ শ্রমিক সব সময় কাজ করে নাসির এগ্রোফার্ম এন্ড নার্সারীতে। তাদের কর্মস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে এই নার্সারীর মাধ্যমে।

স্থানীয়রা জানান, বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো এ কুল চাষ হচ্ছে। এই কুল দেখতে অনেকাংশে লাল, কিছুটা সবুজ। দেশি কুলের থেকে এর স্বাদ খুবই মিষ্টি। সাধারণ দেশি কুলের ভেতরে আঁটি বা বিচি থাকে। কিন্তু এ কুলের ভেতরে তা নেই। এটি বেশ সাড়া ফেলেছে।

নাসির এগ্রোফার্ম এন্ড নার্সারির মালিক নাসির আহম্মেদ বলেন, আমি প্রথমে ইউটিউবে এই কুলের সন্ধান পায়। মৌসুমের শুরুতে চার একর জমিতে দুই হাজার বিচিহীন (সিডলেস) চারা রোপন করি। চার পাঁচ মাসের মধ্যে ফুল আসে এবং প্রচুর পরিমানে কুল ধরে। অলরেডি আমার বাগান থেকে এ কুল হারভেস্ট করা শুরু হইছে। স্থানীয় কিছু ব্যাপারীসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঢাকার কাওরানবাজার, নারায়নগঞ্জ এমনকি সিলেট, চট্টগ্রামেও আমার এখান থেকে কুল যাচ্ছে। এর সবথেকে বড় বৈশিষ্ঠ ভেতরে বিচি নেই। খেতে খুবই সুস্বাদু। অন্যান্য কুল থেকে এর বাজার চাহিদা খুব বেশি। যেহেতু এটা আনকমন সেহেতু আমি অন্যান্য কুল থেকে বাজার মুল্য বেশি পাচ্ছি। আশা করছি বেশি লাভবান হবো।

নাসির আরো বলেন, দুই একর জমির কুল ছয় লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। বাকি দুই একর জমির কুল ৭০ থেকে ৮০টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এ কুল চাষ করতে তার ৪ লাখ ২০ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। এর রেজাল্ট খুবই ভালো। আমার থেকে শতাধিক লোক চারা নিয়ে বাগান করেছেন। চারা বিক্রি করেও বেশ লাভ হচ্ছে আমার।

ফল ব্যবসায়ী খলিল উদ্দীন বলেন, তার থেকে কুল নিয়ে ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। তার এ কুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমরাও লাভবান হচ্ছি।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রশান্ত কুমার প্রামাণিক জানান, প্রথমবারের মত মাগুরাতে এ কুলের চাষ হয়েছে। নাসির আহম্মেদকে কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হয়েছে। এ কুলের জাতের চাষ সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ২০১৬ সালে ফলের চাষ শুরু করেন নাসীর আহম্মেদ। প্রথমে ৫ শতাংশ জমিতে চাষ করলেও বর্তমানে তিনি ১০০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করছেন। প্রতিদিনই বিভিন্ন মানুষ তার নার্সারী দেখতে আসে।

এই বিভাগের আরও খবর